Table of Contents
Toggleচন্দ্রযান-৩
দিনটা ছিল 6ই সেপ্টেম্বর, 2019। চন্দ্রযান-2 অভিযান শেষ মুহুর্তে গিয়ে ব্যর্থ হয়। সমগ্র ভারতবাসীর কাছে ছিল একটি দঃখের দিন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সামনে ইসরোর চেয়ারম্যান কে. সিভান অশ্রুধারা আটকাতে পারননি। প্রধানমন্ত্রী ইসরোর চেয়ারম্যানকে বুকে জড়িয়ে ধরে সমবেদনা জানিয়েছিলেন। অভিযান ব্যর্থ হলেও সমগ্র ভারতবাসীর কাছে দিনটি ছিল গর্বের। কারণ ব্যর্থতা সাফল্যের সিড়ি তৈরি করে।
তবে চার বছর পর ইসরো নতুন উদ্যমে শুরু করেছে মিশন চন্দ্রযান-3। এবারে আরও সতর্কতা সঙ্গে 610 কোটি টাকার বাজেটে 3900 কেজির ল্যান্ডার তৈরি হয়েছে।
চন্দ্রযান-3 সম্পর্কে জানার আগে একটু চন্দ্রযান-2 সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চন্দ্রযান-2 প্রধান কাজ ছিল চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করা। মেরুগুলিতে কয়েক কোটি বছর ধরে সূর্যের আলো পড়ে না। আর দক্ষিণ মেরুতে 4.2 কিলোমিটার একটি গর্ত আছে। আনুমান করা হচ্ছে এই গর্তে উষ্ণতা হতে পারে -160০C । তাছাড়া এখানে হাইড্রোজেন আয়নের উপস্থিতি হওয়ায় বরফের উপস্থিতি থাকতে পারে।
এর আগে 2008 সালের 22শে অক্টোবর; চন্দ্রযান-1 অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীহরিকোটার Satish Dhawan Space Centre থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। এর থেকে চঁদের ভৌগলিক গঠন, বিভিন্ন মৌলের অনুসন্ধান করা সম্ভব হয়েছিল। অর্থাৎ চন্দ্রযান -1 সফল অভিযান ছিল।
এর পরে চন্দ্রযান-2 অভিযান 22শে জুলাই, 2019 উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। যার মধ্যে অরবিটার, ল্যান্ডার ও রোভার ছিল। অরবিটারটি সফলভাবে কক্ষে স্থাপিত করা গেলেও বিক্রম নামের ল্যান্ডারটি অবতণের সময় সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ও চন্দ্রপৃষ্ঠে ধাক্কা খায়।
এবারের চন্দ্রযান-3 এ ল্যান্ডার ও রোভার থাকবে। কারণ চন্দ্রযান-2 এর অরবিটারটি এখনও কাজ করে যাচ্ছে। চন্দ্রযান-3 উৎক্ষেপণের তারিখ আগামী 12 থেকে 19 জুলাইয়ের মধ্যে ঠিক করা হয়েছে যা প্রদেশের শ্রীহরিকোটার Satish Dhawan Space Centre থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে।
চন্দ্রযান-3 প্রধান তিনটি উদ্দেশ্য রয়েছে। (i) মসৃণ ও সঠিক অবতরণ, (ii)চন্দ্রপৃষ্ঠে রোভারের সফলভাবে বিচরণ ও (iii) বিভিন্ন প্রকারের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা।
ল্যান্ডারের কাজ হল চন্দ্রপৃষ্ঠে তাপীয় গতিবিধি ও ভূমি-কম্পন সংক্রান্ত পরীক্ষা করা।
অন্যদিকে রোভারের মধ্যে আছে Alpha Particle Xray Spectrometer (APXS) ও Laser Induced Breakdown Spectroscope (LIBS)। APXS চাঁদের মাটিতে Mg, AL, Si, K, Ca, Ti, Fe এর উপস্থিতি লক্ষ্য করবে। অন্যদিকে LIBS পাথরের রাসয়নিক গঠন ও খনিজের সন্ধানে সাহায্য করবে।
এই অভিযান সকল ভারতবাসীর কাছে একটি গৌরবময় ঘটনা। এই প্রচেস্টা ও সাফল্য ভরতের মহাকাশ অভিযানে আরেকটি গৌরমবয় ইতিহাস তৈরি করবে।